শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
কক্সবাজারের টেকনাফে বঙ্গোপসাগরে ছোট ছোট পাঁচটি বোটে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন ১৩৮ জন রোহিঙ্গা। পরে তাদের আরেকটি বোটে তোলার পরই সেটি ডুবে যায়।
এ ঘটনায় নিখোঁজদের মধ্যে ৭১ জনকে উদ্ধার করে পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। এখনও নিখোঁজ ৫২ রোহিঙ্গা।
কোস্টগার্ড সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, জীবিত উদ্ধার ৭১ জনের মধ্যে ২৪ জন পুরুষ, ৪৪ নারী ও তিন শিশু। মৃত অবস্থায় উদ্ধার ১৫ জনের মধ্যে তিন শিশু ও ১২ নারী ছিলেন। নিহত ১৫ জনকে টেকনাফে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সহকারী পরিচালক (গোয়েন্দা) লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম হামিদুল ইসলাম জানান, ১৩৮ জনের মধ্যে নিখোঁজ ৫২ জন। তাদের উদ্ধারে যৌথভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড।
তিনি বলেন, উদ্ধার অভিযানকালে ওই বড় বোট থেকে দুজন দালালকে আটক করে কোস্টগার্ড। এ ব্যাপারে তাদের বিশদ জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এরপর আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
প্রকৃতপক্ষে পাঁচটা ছোট বোটে মোট ১৩৮ জন রোহিঙ্গা মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। পরে দালাল তাদের অপর একটি বোটে তুলে নিয়ে রওনা হলে, সেটি আজ ভোরে ডুবে যায়। সকাল থেকে আরেকটি নিখোঁজ বোটের কথা বলা হলেও সেটি মূলত ওই ছোট বোটগুলোরই একটি।
এর আগে সেন্টমার্টিন কোস্টগার্ডের স্টেশন কমান্ডার লে. নাঈম উল হক বলেন, ‘নিখোঁজদের উদ্ধারের চেষ্টা করছি আমরা। ট্রলারডুবিতে হতাহতদের সবাই রোহিঙ্গা। টেকনাফ থেকে সমুদ্রপথে ট্রলারযোগে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় যাচ্ছিলেন তারা।’
উদ্ধার রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, সোমবার রাতে সমুদ্রপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করেন তারা। সেন্টমার্টিনের ছেঁড়াদ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ইঞ্জিন বিকল হয়ে ট্রলার ডুবে যায়। এতে অনেকেই ডুবে যান। কেউ কেউ সাঁতরে পার হন।
যেভাবে ডুবে যায় বোটটি এবং উদ্ধার অভিযান
দালালরা তাদের সবাইকে ওই বড় বোটে তুলে নেয়। রাত ৪টায় সেন্টমার্টিন থেকে ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে সমুদ্রে পাথরের সাথে ধাক্কা লেগে বোটের তলা ফেটে যায়। এতে পানি প্রবেশ করে তা ডুবে যায়। খবর পেয়ে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড স্টেশন সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ থেকে দুটি উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। শুরু করে উদ্ধার অভিযান। তখন সাগরে ভাসমান অবস্থায় ৭১ জনকে জীবিত এবং ১৫ জনকে মৃত উদ্ধার করা হয়।
দুপুর নাগাদ ডুবন্ত বোটটি উদ্ধার করে সেন্টমার্টিনে নিয়ে আসা হয়। উদ্ধার জীবিত রোহিঙ্গাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। মৃতদের যথাযথ নিয়ামানুযায়ী টেকনাফে তাদের স্বজনদের কাছে হস্থান্তর করা হয়।
উদ্ধার অভিযানে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড জাহাজ মনসুর আলী, শ্যামল বাংলা ও ছোট বড় বেশ কয়েকটি বোট নিয়োজিত রয়েছে।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, ডুবে যাওয়া ট্রলারের রোহিঙ্গারা নুর আলম ও সৈয়দ আলম নামের দুই দালালের মাধ্যমে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাচ্ছিলেন। দুই দালালও ডুবে যাওয়া বোটে ছিলেন।